দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে পর্যটন স্পটে শিশু নিখোঁজের ঘটনা
- আপলোড সময় : ২০-১১-২০২৫ ১০:১৯:২৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-১১-২০২৫ ১০:১৯:২৪ পূর্বাহ্ন
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে পর্যটন স্পটে শিশু নিখোঁজের ঘটনা। সপরিবারে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে বেড়াতে যাওয়াদের মধ্য থেকে দলছুট হয়ে শিশুদের হারিয়ে যাচ্ছে। শিশুদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়ে। গতবছরের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ মাসে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে দলছুট হয়ে ৪৪৩ জন শিশু নিখোঁজ হয়। আর গত ৯ মাসে শুধু কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ ১৬০ শিশুকে উদ্ধার করেছে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট ট্যুরিস্ট পুলিশ। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানোসহ সঙ্গের শিশুদের প্রতি আরো মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঈদ বা বড় কোনো উৎসবের ছুটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে যখন পর্যটকদের ঢল নামে, তখন শিশু নিখোঁজের ঘটনা বেড়ে যায়। বিগত ২০২৩ সালে টুরিস্ট পুলিশ দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পট থেকে হারিয়ে যাওয়া ৩৭১টি শিশু উদ্ধারের পাশাপাশি ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। দেশের প্রায় দেড় হাজার স্কট পর্যটন স্কটে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় বিগত ২০১৩ সালে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট টুরিস্ট পুলিশ গঠন করা হয়। বর্তমানে ঢাকা (ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম), খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী (রংপুর) ওই চার বিভাগের ১১টি অঞ্চলে টুরিস্ট পুলিশ সেবা দিচ্ছে। তবে পর্যটকের অনুপাতে টুরিস্ট পুলিশের জনবল খুবই কম।
সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন পর্যটনস্পটে ভ্রমণপ্রেমীদের সঙ্গে থাকা শিশুদের দলছুট বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা অনেক সময় পর্যটকদের মধ্যে ভ্রমণ বিষয়ে নেতিবাচক ধারণাও তৈরি হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে সবসময় সতর্ক ও তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর হারানো শিশুদের উদ্ধার করে অভিভাবক বা মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া টুরিস্ট পুলিশের পেশাদারিত্বের অংশ। সাধারণত শিশুরা অনেক বেশি কৌতূহলী। তার মধ্যে অনেক বেশি দুরন্ত ও ডানপিটে। নতুন জায়গায় তারা আরো বেশি কৌতূহলী হয়ে ওঠে। সেজন্যই তারা দলছুট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে শিশুদের নিরাপত্তা। কক্সবাজার সৈকতে যে হারে শিশু হারিয়ে যাচ্ছে সেজন্য শিশু উদ্ধারে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের আলাদা টিম করা হয়েছে। তাছাড়া সৈকতে ২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরাও আছে। তার মধ্যে একজন অফিসার একটা সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং করেন। ট্যুরিস্ট পুলিশের স্পেশালাইজ মনিটরিংয়ের কারণে লাখ লাখ মানুষের মধ্য থেকে শিশুদের উদ্ধার করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে উদ্ধার কাজও সহজ হয়। তাছাড়া বাইনোকুলারের মাধ্যমে শিশুদের ওপর নজর রাখা হয়। এখন থেকে শিশু হারালে অভিভাবকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। শিশুদের প্রতি উদাসীনতার জন্য তাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করা হবে। আর থানায় মুচলেকা দিয়ে তবেই অভিভাবক শিশুকে কাছে পাবেন।
এ প্রসঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইপিজি মো. মাইনুল হাসান জানান, পর্যটন স্পটে শিশু নিখোঁজের প্রায় হাজারের বেশি ঘটনার রেকর্ড রয়েছে। যখনই কোনো শিশুকে খুঁজে পাওয়া যায় তখনই তাকে পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়। ভ্রমণকে নিরাপদ করার পাশাপাশি পর্যটকদের অভিজ্ঞতাকে নির্বিঘ্ন করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার